ইসলামে রয়েছে মানবজাতির শান্তি ও কামিয়াবির গ্যারান্টি। সুশৃঙ্খল জীবন পরিচালনাসহ ব্যক্তি, সামাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রয়েছে ইসলামের অসাধারণ দীপ্তিময়তা। যার ফোয়ারায় অবগাহন করে হৃদয়ে নৈতিকতার মশাল প্রজ্বলিত করা যায়। সব ক্ষেত্রে ইসলাম শৃঙ্খলা বজায়ের এক জ্বলন্ত উদাহরণ। শান্তি সমৃদ্ধি ও মানবিক শিষ্টাচার গঠনসহ দুনিয়ার সব জ্ঞান-বিজ্ঞানের সন্নিবেশ ঘটেছে ইসলামে। এসব গবেষণার সফল অবস্থান রচনায় ইসলামের অবদান সর্বাগ্রে।
আধুনিক বিশ্ব যেখানে বারবার থমকে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছে, ইসলাম সেখানে সুন্দর ও সহজ সরল সমাধান দিয়ে সারা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। এটাই ইসলামের শাশ্বত বিধান। সমকালীন দুনিয়ার মানবরচিত জীবনব্যবস্থার প্রমত্ত আইনের দিকে দৃষ্টিপাত করলে যে বাস্তবতার চিত্র প্রস্ফুটিত হয় তার চেয়েও বেশি ইতিবাচক সহাবস্থানের সৃষ্টি হয় ইসলামী আদর্শের মাইলফলকে চোখ রাখলে। শুধু জীবনের একটি সময়ে নয় বরং সার্বিক দিকে ইসলামী আদর্র্শের গুরুত্ব অপরিসীম।
মাটির নিচ তথা পাতালপুরী থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বগগন ছাড়িয়ে শান্তি ও কল্যাণ রক্ষার সংগ্রামসহ জীবনের সব ক্ষেত্রেই বিস্তৃত আছে ইসলামের অনুপম আদর্শ। আর এ আদর্শের নমুনাগ্রন্থ হলো মহাগ্রন্থ আল কুরআন। যার অনুসরণ ছাড়া দুনিয়ার মানুষ সম্পূর্ণ অচল। কারণ এ কুরআন এমন এক কিতাব যা নির্ভুল এবং তার ভার স্বয়ং আল্লাহই নিয়েছেন। এটাকে পৃথিবীর সব আদর্শের রাজতোরণ বা প্রাণ বলা হয়। কেউ যদি ধ্বংস বিনাশ বা পাপের চরমপর্যায় থেকে জীবন বদলিয়ে কোনো আলোকিত জীবনের সন্ধান লাভ করে তবে তা ইসলামেরই অবদান। আর কেউ যদি সোনালি পথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভয়ঙ্কর বক্রতার মধ্যে হারিয়ে যায়, তবে তার জন্য পরিবেশ এবং ব্যক্তিগত কর্মই দায়ী। সর্বোপরি তাকে সেখান থেকে তুলে আনার দায়িত্ব ইসলামের। কেননা ইসলাম এমন এক জীবনব্যবন্থা যার মধ্যে কোনো স্বজনপ্রীতি মিথ্যা হানাহানি মারামারি কাটাকাটি খুন লুটতরাজ নেই। সাধারণভাবে ঈমানের দাওয়াত ছাড়া ইসলাম নিজের ঘরে প্রবেশের জন্য কাউকে জোর দেয় না। কারণ পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন ‘দীনের ব্যাপারে কোনো জোর জবরদস্তি নেই।’ ইসলামের ছায়ায় আশ্রয় গ্রহণের পর আল্লাহর হুকুম মানা জরুরি হয়ে পড়ে। এ জন্য সন্তান-সন্ততি যখন সাত বছরে উপনীত হয় তখন তার প্রতি নামাজের হুকুম করার কথা বলা হয়েছে। আর ১০ বছর হলে আল্লাহর বিধান তথা নামাজ ইত্যাদির জন্য তাকে শাসন করার হুকুম দেয়া হয়েছে।
পৃথিবীর যেখানে ইসলাম নেই সেখানে কোনো আদর্শ নেই। ইসলামহীন কোনো রাজ্য বা গোষ্ঠীর মধ্যে যদি কোনো আদর্শ পরিলক্ষিত হয় তবে তা নিছক স্বার্থসিদ্ধি এবং অস্থায়ী হিসেবে ভেবে নিতে হবে। ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন আদর্শের নমুনা। যদি কেউ আদর্শ জীবন অর্জন করতে চায় সে যেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ করে। মানবজীবনে আল্লাহর রাসূলের আদর্শই উত্তম আদর্শ।
প্রত্যেকের উচিত ব্যক্তিগত জীবনে একক চেষ্টা কিংবা ব্যাপক প্রচেষ্টার মাধ্যমে হলেও ইসলামের আদর্শ গ্রহণ করা। এটা এমন এক আদর্শ যার পদতলে পৃথিবীর সব আদর্শ মাথানত করে। পৃথিবীতে শান্তি আসার জন্য আদর্শবান মানুষের প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।
লেখক : মিযানুর রহমান জামীল, প্রবন্ধকার।