আমেরিকান মুসলিম অ্যাক্টিভিস্ট নিকোল কুইন একজন ধর্মান্তরিত মুসলিম। ১৯৮১ সালে হিউস্টনের এক খ্রিস্টান পরিবারে তার জন্ম। তিনি পেশায় একজন পেশাদার ফটোপ্রাফার। আমেরিকার শহর হিউস্টন, অরেঞ্জ এবং টেক্সাসে বড় ভাই জোয়ের সঙ্গে তার ছোটবেলার অধিকাংশ সময় কেটেছে। ৮ বছর বয়সে নিকোল ও তার ভাই জোয়ি তাদের পালিত বাবা-মা’র সঙ্গে ডালাসের দক্ষিণে অবস্থিত একটি ছোট্ট শহরে চলে আসেন এবং তার স্নাতক শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন।
১৭ বছর বয়সে নিকোল ‘পামার হাই স্কুল’ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং তার জীবন শুরু করার জন্য নিজের অ্যাপার্টমেন্টে চলে যান। নিকোল তার নিজের ব্যয়-ভার বহনের জন্য ফটোগ্রাফির ওপর কোর্স করেন এবং ফটোগ্রাফি স্টুডিওতে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
মাত্র দুই বছরে মধ্যে নিকোল একটি ফটোগ্রাফি স্টুডিও পরিচালনা করতে সক্ষম হন এবং বিভিন্ন রাজ্যে ভ্রমণ করতে থাকেন। টানা কয়েক বছর শহর থেকে শহরে ছুটে বেড়ানোর পর তিনি নিউইয়র্কে একটি স্টুডিও পরিচালনা করতে শুরু করেন। এই সময়ের মধ্যে নিকোল তার দক্ষিণের শিকড়কে অনুভব করেন এবং নিজের ফটোগ্রাফির ব্যবসা শুরু করার জন্য টেক্সাসে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নেন।
তার নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে এবং কাজের জন্য বিভিন্ন শহরে ভ্রমণে নিকোল একটি অস্থায়ী জীবনধারার স্বাদ লাভ করেন। তিনি যেখানেই থাকতেন না কেন, সেখানে তিনি কখনো তার শিকড় রাখতেন না এবং নিজের জীবনকে একটি বিশাল সুযোগ হিসেবে দেখেন।
সামাজিককরণের ক্ষেত্রে নিকোল ছিলেন অত্যন্ত স্বাভাবিক একজন মানুষ। বিভিন্ন শহরে তার বসবাসের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি অত্যন্ত দ্রুত বন্ধু তৈরি করতে শিখেন এবং তা অতি দ্রুত ছুড়ে ফেলেও দিতেন।
তিনি ‘নাইটলাইফ’ দৃশ্যকে তার নিজের ফটোগ্রাফি ব্যবসায় ফোকাস করার সিদ্ধান্ত নেন এবং এতে তিনি অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। তিনি খুব দ্রুতই ডালাসের একমাত্র নারী ‘নাইট লাইফ’ ফটোগ্রাফার হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন এবং পার্টি শিল্পের বড় বড় ক্লায়েন্টস অর্জন করেন।
ফটোগ্রাফি ব্যবসার কারণে জাস্টিন টিম্বারলেক, টিম্বারল্যান্ড, কেট হুডসন, টমি লি’র মতো নামকরা অগণিত ক্রীড়াবিদ, অভিনেতা ও মিউজিশিয়ানদের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। প্রতিটি রাতে নিকোল বিভিন্ন ক্লাবে রাত ৩টা পর্যন্ত কাটাতো এবং দুপুর পর্যন্ত ঘুমাতো। মদ্যপান ছিল তার একটি স্বাভাবিক অভ্যাস এবং এটি তার জীবনধারার অংশ হয়ে ওঠে।
এভাবে নিকোলের আত্মা অনুভূতি হারিয়ে ফেলতে শুরু করে। তার জীবনে আরো বেশি কিছুর প্রত্যাশা করেন এবং জীবনের অস্তিত্ব সম্পর্কে অন্যদের সঙ্গে গভীর কথোপকথনে নিজেকে জড়িত করতেন। ক্লাব, পার্টি ও লোভের দ্বারা পরিবেষ্টিত বহু বছরের বস্তুবাদী জীবনধারার পর নিকোল আত্মার সন্ধান শুরু করেন এবং মাত্র দুই বছরের মাথায় তিনি ইসলামি বিশ্বাসে যোগদান করেন। এর আগে তিনি ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কিছুই জানত না।
জীবনের অর্থ খোঁজার সময় পৃথিবীর সব অংশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বন্ধুরা তাকে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এক রাতে শুটিং শেষে এক মুসলিম যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং তার সঙ্গে বন্ধু তৈরি করেন। তার বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই মুসলিম ছিলেন। কিন্তু তারা সবাই একই ভাবে নিকোলের মতোই জীবন-যাপন করতেন।
ধর্মীয় মানুষ হিসাবে তারা কখনো নিকোলের মনোযোগ আকর্ষন করত না। তার নতুন আত্মার অনুসন্ধানের দুঃসাহসিক যাত্রায় তার নতুন মুসলিম বন্ধুটি তার সঙ্গে ঘন্টার পর ঘণ্টা কথা বলতেন। তারা জীবন, অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত সম্পর্কে কথা বলতেন এবং তারা উভয়েই তাদের বর্তমান অবস্থানের চেয়ে বিশ্বকে আরো বেশি কিছু অফার করার অনুভূতি অনুভব করতেন।
নিকোল অনেকগুলো উৎস থেকে ইসলাম সম্পর্কে শুনেছেন কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রভাবটি এসেছে ইসলামের সঙ্গে তার প্রকৃত অভিজ্ঞতা থেকে। ইসলামি বিশ্বাসের শৃঙ্খলা তাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করে।
মদ্যপান না করেই কিংবা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সঙ্গে জড়িত না হয়ে কীভাবে মুসলমানরা তাদের জীবনযাপন করতে পারে এবং ক্লাব-পার্টিতে সময় নষ্ট না করে তারা তাদের জীবনকে কতটা গুরুত্বপূর্ণ করে তুলতে পারে- তা নিকোলের মনে বিস্ময়ের জন্ম দেয়।
তিনি অনলাইনে ইসলামের সঙ্গে নিজেকে আবিষ্ট করে ফেলেন। ইসলাম গ্রহণকারী মুসলমানদের সম্পর্কে জানতে কখনো কখনো তিনি সমস্ত রাত পার করে সূর্যোদয় পর্যন্ত ইউটিউবে ভিডিও দেখছেন। ইসলাম গ্রহণকারী এসব মুসলমানদের কাহিনী তার জন্য প্রেরণাদায়ক ছিল কারণ এই লোকেরা একই ধরনের আকাঙ্খার কারণে তারা ইসলামের শান্তি খুঁজে পেয়েছিল।
ইসলাম নিয়ে নিকোলের ক্রমবর্ধমান নানা প্রশ্ন আর তার মনোযোগের বিষয়টি বেশ ভালভাবেই খেয়াল করেন ওই মুসলিম যুবকটি। তিনিই তাকে প্রথম ইংরেজি ভার্সনের একটি কোরআন উপহার দেন। এছাড়াও, মসজিদের মুসলিম শ্রেণির সম্পর্কে তিনি নিকোলকে ধারণা দেন। ইসলামের সৌন্দর্যের জন্য নিকোলের প্রশংসা যুবকটিকে উৎসাহিত করে নিকোলকে ইসলামের সঙ্গে আরো বেশি ঘনিষ্ট করে তুলতে।
একসময় তারা ধীরে ধীরে তাদের ঘনিষ্টতা কমিয়ে দেন এবং প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব উন্নতির দিকে ফোকাস করার সিদ্ধান্ত নেন। এভাবে মাসের পর মাস পেরিয়ে যেতে থাকে এবং ধীরে ধীরে নিকোল তার জীবনের জন্য ভালবাসা অনুভব করতে থাকেন এবং তার হৃদয়ে ঈশ্বরের ভাবনা গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকে। তার ব্যক্তিত্বের মধ্যে কঠোর পরিবর্তন দেখে তার পার্টির বন্ধুরা বিভ্রান্ত হয়ে যান।
টানা ৫ থেকে ৬ মাস ইসলাম নিয়ে অধ্যয়নের পর নিকোল তার জীবনে উন্নতি দেখতে পায়। ইতোমধ্যে তার হৃদয়ে কালেমা ‘শাহাদা’ ঘোষণার অনুভূতি জাগ্রত হয় এবং নিকোল সিদ্ধান্ত নেয় যে বিষয়টি অন্যদের কাছে ঘোষণার জন্য তিনি প্রস্তুত আছেন।
লজ্জা ও অস্বস্তিকর অবস্থা দূর করতে পরামর্শের জন্য তিনি তার পুরানো মুসলিম বন্ধুটির শরণাপন্ন হন। তখনো পর্যন্ত তার ইসলামের অধ্যয়নে নিবেদিত থাকার বিষয়ে মুসলিম বন্ধুটি অবাক হয়ে যান এবং অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে তিনি তার ইসলাম গ্রহণের সব আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করেন।
ইতোমধ্যে নিকোল কয়েকজন মুসলিম নারীর সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করেন। তিনি তার মেয়ে বন্ধুদের নিয়ে স্থানীয় একটি মসজিদের ইমামের কক্ষে প্রবেশ করেন। কালেমা শাহাদা পাঠের জন্য তাকে প্রস্তুত করতে ওই নারীরা তাকে সাহায্য করেন। নিকোলের কথায় ‘তারা ছিল খুবই হেল্পফুল’ এবং এজন্য তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলেন।
কালেমা পাঠের জন্য নিকোল লম্বা একটি সাদা লিনেন স্কার্ট পরেন এবং মাথায় হিজাব পরিধান করেন। নতুন বান্ধবীরা তাকে ওজু এবং স্কার্ফ পরতে সাহায্য করেন। ডাঃ ইউসুফ জিয়া কাভাসি নামে তুর্কি বংশোদ্ভূত একজন ইমাম তাকে কালেমা পাঠ করান।
ইসলামের প্রথম এই যাত্রায় নিকোলের চোখ-মুখে গোলাপী আভা ফুটে ওঠে। শাহাদা পাঠের আগে ইমাম তার কাছে জানতে চান-তিনি যা করতে যাচ্ছেন তা সুস্থ মস্তিস্কে করছেন কিনা। এরপর ইমাম তার নিকট কালেমার অর্থ সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি তাকে ইংরেজি ও আরবি উভয় ভাষাতেই কালেমা পাঠ করান।
ইসলাম গ্রহণের পর নিকোলের জীবন পুরো বদলে যায়। তিনি তার ‘নাইটলাইফ’ ফটোগ্রাফির কাজ ছেড়ে দেন এবং ডালাসের শহরতলিতে একটি বৃহৎ কর্পোরেশনে ডে শিফ্টের নতুন চাকরি খুঁজে পান।
ইসলামের প্রতি তার দৃঢ় একাগ্রতা তাকে মহান আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে আসে এবং সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে তার সম্পর্ক বৃদ্ধি পেতে থাকে। একদা মদ্যপান ও পার্টিতে সময় কাটানো নিকোল এখন ইসলাম সম্পর্কে আরো বেশি করে জানতে তার নতুন মেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান এবং মসজিদে গিয়ে নিয়মিত নামাজ আদায় করেন।
শাহাদা ঘোষণার কয়েক মাস পর নিকোল ইসলাম সম্পর্কে আরো জানার গভীর আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। এজন্য তিনি একটি মুসলিম দেশ সফর করার জন্য দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা অনুভব করেন। আমেরিকার বাইরে অন্য কোথাও যাওয়ার কোনো অভিজ্ঞতা তার ছিল না।
নিকোল বলেন, ‘মুসলিম দেশে বসবাসকারী মানুষেরা কিভাবে জীবন যাপন করে, কেমন করে ধর্ম-কর্ম করে একজন মুসলিম হিসাবে সে সম্পর্কে আরো জানতে চেয়েছিলাম।’
নিকোল তার এই আকাঙ্ক্ষার কথা তার একজন মুসলিম ছেলে বন্ধুর কাছে জানান। ওই বন্ধুটি জর্ডানে তার পরিবারের কাছে নিকোলের ইচ্ছার কথাটি জানান এবং জর্ডান সফরে নিকোলকে তার পরিবারে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। ২০০৮ সালের নভেম্বরে নিকোল প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্য সফর করেন।
মধ্যপ্রাচ্য সফর সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘একাকি জর্ডান সফরের ব্যাপারে আমি খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম। আমি সেখানকার খুঁটিনাটি সবকিছুই দেখতে চেয়েছিলাম। এটা খুবই মজার ছিল কারণ যারা আমাকে দেখেছিল, তারা ধরেছিল যে আমি জর্ডানেরই নাগরিক।’
সেই স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘সেখানকার অধিকাংশ মেয়েই হিজাব পরিধান করে। আমিও চেয়েছি তাদের মতো করে এটি পরতে। সেখানে আমার অতিথি মায়ের প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ। তিনিও হিজাব পরতেন এবং আমাকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন।’
তার অতিথি পরিবারটি তাকে তাদের মেয়ের মতোই আদর করত এবং তাকে তাদের পছন্দের রেস্টুরেন্ট, দোকান এবং কফি হাউসে নিয়ে যেত।
সেখানকার প্রায় ৩০ শতাংশ মেয়েই হিজাব পরিধান করে না এবং তারা সাধারণত প্রকাশিত পশ্চিমা পোশাক পরিধান করেন। এই বিষয়টি নিকোলকে বেশ কষ্ট দেয়।
আম্মানের নতুন পরিবেশে হিজাবে নিকোল তার নিজেকে অত্যন্ত পবিত্র অনুভব করেন এবং অন্যদের কাছ থেকে অনেক প্রশংসা কুড়ান। এটি তার আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। নিজ দেশে ফিরে গিয়ে হিজাব চেড়ে দেয়ার চিন্তাটি তিনি ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন।
নিকোল বলেন, ‘মাত্র ৩০ দিনের জন্য যদি কেউ হিজাব পরিধান করে আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি তিনি এটি কখনো ছাড়তে পারবেন না। এটি তার অন্তরে অন্যরকম সুখের অনুভূতি নিয়ে আসবে।’
নিকোল জর্ডান থেকে টেক্সাসে ফিরে আসেন এবং তার জর্ডানী মুসলিম বন্ধুটির সঙ্গে তার নতুন অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য অত্যন্ত উদগ্রীব ছিলেন। সকালে ফজরের নামাজের জন্য মুসলিম বন্ধুর মা তাকে প্রতিদিন জাগিয়ে তুলতেন এবং সূর্যাস্তের সময় তাদের আম্মানের শ্বেত পাথরের ঘর থেকে তাকে সূর্যের বিভিন্ন রঙের বর্ণালী দেখাতেন। এসব বিষয় তিনি অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে মুসলিম বন্ধুর সঙ্গে শেয়ার করেন।
হাসান (নিকোলের মুসলিম বন্ধু) এবং নিকোল দম্পতি বর্তমানে ডালাস শহরের টেক্সাসে অত্যন্ত সুখেই বাস করছেন। নিকোল তার স্বামীর সহায়তায় দাওয়াতের মাধ্যমে তার জীবনের উদ্দেশ্য অব্যাহত রেখেছেন। দাওয়াতি কাজের জন্য তিনি তার নিজস্ব ওয়েবব্লগ চালু করেছেন, www.QueensofIslam.com।
নিকোল তার ব্লগে বলেন, ‘আমার ইসলামে ধর্মান্তর যাত্রায় আমি যে সকল সমস্যার মোকাবেলা করেছি, তা যাতে অন্যরা না করে-এই উদ্দেশ্য নিয়েই আমার এই দাওয়াতি ব্লগ।’
এছাড়াও তিনি আমেরিকার মুসলিম কমিউনিটির সঙ্গে দাওয়াত, ইসলামে ধর্মান্তর, জনগণের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্কে নিয়মিত কথা বলেন।
আল জাজিরার ‘ইসলাম ইন আমেরিকা’, আলজেরিয়া টিভির ‘দ্য চুজ ইসলাম’ এবং রাষ্ট্রদূত আকবর আহমেদের ‘জার্নি ইন্টু আমেরিকা’ তথ্যচিত্রের মাধ্যমে নিকোলকে তুলে ধরা হয়েছে।
সম্প্রতি নিকোল ও হাসান আমেরিকায় ইসলাম সম্পর্কে বিবিসির ডকুমেন্টারিটিতে অংশ নেন। ডকুমেন্টারিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। আপনি চাইলে নিকোলের ফ্যামিলি ব্লগ অনুসরণও করতে পারেন।
নিকোল কুইন ডটকম অবলম্বনে