প্রথম কথা হলো, মরহুম শব্দের সরাসরি অর্থ হলো ‘যার প্রতি রহম করা হয়েছে’। মরহুম শব্দটি কোন মৃত ব্যক্তির প্রতি প্রয়োগ করা নিষিদ্ধ এবং নাজায়েজ বলে অনেকে মন্তব্য করেন। তাঁদের যুক্তি হলো, কোন মৃত লোকের ওপর রহম করা হয়েছে বলার অর্থ হলো-আমি নিশ্চিত করলাম যে আল্লাহ তাঁকে মৃত্যুর পর দয়া করছেন। অন্য অর্থে তিনি জান্নাতী হয়ে গেছেন। আর বলা বাহুল্য, কুরআন বা সুন্নাহ’র কোন বর্ণনা ছাড়া কোন মৃত ব্যক্তির রহমপ্রাপ্ত কিংবা জান্নাতী হওয়ার নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারি না। সুতরাং যাঁদের জান্নাতী হওয়ার ব্যপারে কুরআন বা সুন্নায় নিশ্চিত ও সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি তাদের কাউকে মরহুম বলা যাবে না। এই মত যাঁরা পোষণ করেন তাদের মধ্যে আল্লামা বিন বায রহ:ও রয়েছেন। অবশ্য তিনি তাঁর ফাতওয়ার শেষের দিকে বলেছেন-তবে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের উলামায়ে কেরাম নেককারদের প্রতি জান্নাতের আশা ও সুধারণা পোষণ করেন এবং বদকারদের জন্য তার বিপরীত। এটা সুরা তাওবার ৭২ ও ৬৮নং আয়াতে মুমিনদের জন্য জান্নাতের ওয়াদার আলোকেই তারা করে থাকেন। ফতোয়ার একেবারে শেষে এসে তিনি বলেন-তবে কোন কোন আলেমের মতে যে ব্যক্তির প্রতি কমপক্ষে দুজন বিশ্বস্ত লোক ভালো’র সাক্ষ্য দেয়, তাকে জান্নাতী বলে সাক্ষ্য দেওয়াতে অসুবিধা নেই।
আমি যে মতটিকে এক্ষেত্রে যথার্থ এবং সঠিক বলে মনে করি সেটা হলো-ইবনে উসাইমীন রহ: এর মত। তিনি বলেন-কেউ কোন মৃত ব্যক্তিকে যদি মরহুম বলে এই অর্থে মন্তব্য করে যে, লোকটিকে আল্লাহ তা’আলা নিশ্চিতভাবে ক্ষমা ও দয়া করেছেন-অথচ এ বিষয়ে কোন নিশ্চিত প্রমাণ নাই তাহলে সেটা নিষিদ্ধ। তবে লোকেরা সাধারণত: মৃত মুসলিমদের মরহুম এই অর্থে বলে না। অর্থাৎ মরহুম শব্দটি সংবাদ হিসেবে বলে না। বরং এটি দুআ এবং নেক আশা হিসেবে বলে থাকে। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন- ‘রাহিমাহুল্লাহ’ (তার প্রতি রহম করা হয়েছে) এই বাক্যটি সংবদমূলক; অথচ এটাকে দু’আর অর্থে নেওয়া হয়। আর ‘মরহুম’ (তিনি রহমপ্রাপ্ত) শব্দটিও সংবাদমূলক। সুতরাং সেটিও দু’আর অর্থে ব্যবহ্রত হতে বাধা নেই। সুতরাং কোন মৃতকে সাধারণত: নিশ্চিতভাবে ক্ষমা প্রাপ্ত হয়েছেন বলে ধারণা থেকে (অর্থাৎ সংবাদমূলক বাক্য হিসেবে) মারহুম বলা হয় না। বিধায় দু’আ ও মুমিনের প্রতি সুধারণা থেকে মরহুম বলাতে কোন সমস্যা নাই।